শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:২৮ অপরাহ্ন

প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দিতে ফের উদ্যোগ

প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দিতে ফের উদ্যোগ

বিবর্তন প্রতিবেদক: প্রায় এক যুগ পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির জট খুলছে। নানা জটিলতায় এতদিন তাদের বিভাগীয় পদোন্নতি আটকে ছিল। এতে সিনিয়র সহকারী শিক্ষকরা ১৫-২০ বছর ধরে একই পদে কর্মরত আছেন। ইতোমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কাছ থেকে সারাদেশে প্রধান শিক্ষকবিহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সন্তোষ কুমার অধিকারী বলেন, সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আদালতে মামলার কারণে দীর্ঘদিন পদোন্নতি বন্ধ ছিল। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। তাই প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) নির্দেশনার প্রয়োজন হবে। পিএসসির নির্দেশনার আলোকে শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়া হবে।
জানা গেছে, দেশের আট হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাই প্রধান শিক্ষকবিহীন স্কুলগুলোতে জোড়াতালি দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। এতে শিক্ষা সংক্রান্ত নানা কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। এতদিন সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি না দিয়ে বিদ্যালয়গুলোতে সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয় সরকার। এতে সিনিয়র সহকারী শিক্ষকরা পদোন্নতি বঞ্চিত হন।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর অহেতুক জটিলতার সৃষ্টি করে পদোন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি করে। নিরুপায় হয়ে তারা আদালতে মামলা করেন। তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সম্প্রতি প্রধান শিক্ষকদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা করায় এখন থেকে এ পদে নিয়োগ দেবে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এতে করে বিভাগীয় পদোন্নতির সুযোগও কমে আসছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে তিন ধাপে ২৬ হাজার ১৯৩টি নিবন্ধিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করা হয়েছে। এ হিসেবে দেশে ৬৩ হাজার ৮৬৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। পুরনো ৩৭ হাজার ৬৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে আট হাজার বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। অর্ধ যুগ ধরে এ পদগুলো শূন্য রয়েছে। তিন বছর আগে দু’ধাপে প্রায় চার শতাধিক প্রধান শিক্ষককে সরাসরি নিয়োগ দেয়া হয়। সদ্য জাতীয়করণকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থা আরো করুণ। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ২২ হাজার ৯৮১টির অধিকাংশতে প্রধান শিক্ষক থাকলেও তাদের যোগ্যতা-অভিজ্ঞতা সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের অনুরূপ নয়। অনেকের শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্কটও রয়েছে। জাতীয়করণকৃত স্কুলগুলোর তৃতীয় ধাপের ৯৬০টি বিদ্যালয়ের কাজ এখনো শুরু হয়নি। আর দ্বিতীয় ধাপের ২ হাজার ২৫২ স্কুলের গেজেট প্রকাশ নিয়ে চলছে নানা জটিলতা। সবগুলো স্কুলের জাতীয়করণের কাজ শেষ হলে এখানে নতুন জটিলতা ও সমস্যা দেখা দেবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রিয় কমিটির সহ-সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মামলার কারণে যেমনি প্রাথমিকে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে তেমনি আইনি জটিলতায় একযুগ ধরে প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। এ জটিলতা নিরসনে তৃতীয় পক্ষের সমন্বয়নে একটি কমিশন গঠন করে সমস্যাসৃষ্টির কারণ উদঘাটন করে সমাধানের উপায় খোঁজে বের করার জন্য তিনি সরকারের নিকট দাবি জানান।
এ ব্যাপারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সভাপতি মুহা. আ. আউয়াল তালুকদার বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের দুর্বল প্রশাসনিক কার্যক্রমের কারণে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন বিভাগীয় পদোন্নতি বন্ধ থাকায় বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম অচল ও বিঘ্নিত হচ্ছে। পদোন্নতি বঞ্চিত সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ভাল লাগলে সংবাদটি শেয়ার করুন........

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদিত... © কর্তৃপক্ষদ্বারা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত |২০২০|
Design & Developed BY CHT Technology