বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১১ পূর্বাহ্ন

ভালোবাসা দিন-ভালোবাসা পাবেন

ভালোবাসা দিন-ভালোবাসা পাবেন

॥ওমর ফারুক শামীম॥
এই যে ভাই শুনছেন? একটু ভালোবাসা দিন। বিশাল পৃথিবীটা ভালোবাসায় ভরপুর। অথচ হাজারো প্রাণ ভালোবাসার অভাবে ধুঁকছে। আচ্ছা আপনার কি মনে পরে? চিক-চিকে রোদের সকালে যেদিন আপনার মা কপালে টিপ লাগিয়ে, নতুন জামা পরিয়ে আহ্লাদে প্রথম স্কুলে নিয়ে যাচ্ছিলো? আপনার তেলমাখা কচি গালটাতে সকালের সুর্যকে ম্লান করে কত্তবড় আলোমাখা চুমু এঁকেছিলেন মা? সেখান থেকে একটু ভালোবাসা দিন। ভালোবাসা তো কমে না। একবার দিয়েই দেখেন না। নিশ্চয়ই তারচে বেশি পাবেন। কেন দিচ্ছেন না? দিলে ক্ষতি কি? সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে পবনের মিতালী দেখে যেটুকু ভালোবাসা পেয়েছেন, সেখান থেকে কিঞ্চিৎ ভালোবাসা দিন। টর্ণেডোর আঘাতে লন্ডভন্ড সুন্দরবনের বাঘ-হরিণের সহ-যাত্রার ভেসে যাওয়া থেকে ভালোবাসা দিন।

পৃথিবীটা ভালোবাসার দেয়া-নেয়া হয়ে ঘুরছেই। এমন অফুরন্ত ভালোবাসার মাঝেও অগণিত প্রাণ ভালোবাসার কাঙাল হয়ে কাঁদছে। আমাদের জন্য ভালোবাসার এত অভাব কেন? আসলে অভাবটা লোভ আর স্বভাবের। ভালোবাসা অফুরন্ত আমার কাছে, আপনার কাছে। কিন্তু আমরা তা বিলিয়ে দিতে জানি না, কৃপণতা করি। বিত্ত-বৈভব আর দম্ভের প্রাচীরে গেঁথে আছে ভালোবাসা।
অথচ আমি বিশ্বাস করি ভালোবাসা অনেক শক্তিশালী। উজ্জ্বল ব্যপ্তি তার অনন্তকাল ধরে। পৃথিবীর প্রাণেই অসীম ভালোবাসা আছে। শুধু দেয়া আর নেয়ার অভ্যাসে আমরা কৃপণ হয়ে যাই। আমরা একে অন্যকে প্রয়োজনমত ভালোবাসতে জানি না। ইচ্ছে অনুযায়ী ভালোবাসা পাইও না। অথচ আমরা ভালোবাসার আমৃত্যু কাঙাল।

ওহে ভাই, যে দিন মাটির ঘরে মাকে নিয়ে গেছেন কান্নাজলের পথভেঙে, সেখান থেকে ভালোবাসা দিন। গেলো বছর আপনার প্রথম সন্তানের অকাল মৃত্যুতে যে ভালোবাসা আগুনে পুরছে সেখান থেকে ভালোবাসা দিন।

আরে ভাই, আপনার ভালোবাসা কোথায় নেই? তাও কেন কৃপণতা? বাড়ির ধারে নদীর পাড়ে যান। কৃপণতা ঝেড়ে ফেলুন। শৈশবের উচ্ছল্য থেকে ভালোবাসা কুড়িয়ে আনেন। ও মন- তোমার কি মনে আছে? নদীতে ডুবে যাওয়া কুকুর ছানাটিকে তুলে আনার পর থেকে সে তোমার বাড়িতে ভৃত্যের মত আমৃত্যু পাহারাই দিয়ে যাচ্ছে। ওখান থেকে ভালোবাসা দাও-না। বিলের জলে ডাহুকের ডাক, কাক-শালিকের কিচির-মিচির থেকে যে ভালো লাগা কুড়াতে- সেখান থেকে একটু দাও।

আরে ভাই! পথের পাশের মানুষটা ভালোবাসাহীন হয়ে কাঁদছে! ছোট্ট গাঁয়ে সোনায় মোড়ানো ধানের পালা থেকে একটু ভালোবাসা খুঁজে আনেন। ওদের দিন। পিদিম জ্বালা সন্ধ্যা বেলায় মায়ের ঘরে ফেরার ডাক থেকে কিঞ্চিত ভালোবাসা দিন। দেখবেন ভালোবাসার প্রাপ্তিতে স্নিগ্ধ রাত প্রশান্তিতে ভরে গেছে। ভিক্ষা করে ভিক্ষা দেয়া মহানুভ থেকে কিঞ্চিত ভালোবাসা দিন। দেখবেন সকালের সূর্যটা কাল হাসি দিয়ে ফুটবে। ভরা জোৎস্নায় প্রেমিকের ওষ্ঠযুগল থেকে অনাহারীকে ভালোবাসা দিন। দেখবেন আপনার দিনটা, আমার রাতটা, শ্যামল ছায়ায় ঘেরা ঘরটা ভালোবাসায় ভরে যাবে। ভালোবাসা দিন তাহলেই ভালোবাসা পাবেন।

লেখক: প্রধান সম্পাদক, বিবর্তন।

ভাল লাগলে সংবাদটি শেয়ার করুন........

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদিত... © কর্তৃপক্ষদ্বারা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত |২০২০|
Design & Developed BY CHT Technology