রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন
সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে সারাদেশে এক নিয়ম চালু থাকলেও ভিন্নতা ছিল পার্বত্য তিন জেলা “খাগড়াছড়ি-বান্দরবান-রাঙ্গামাটি” তে। সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়া একই হলেও মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের স্থলে নিয়োগ সম্পর্কিত সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া ছিল স্ব স্ব জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এর উপর। ফলে বিগত দিনে এই অঞ্চলে জেলা পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির আলোকে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছিল স্বচ্ছতা নিয়ে।
বর্তমান সরকার দীর্ঘদিন থেকে এ জেলা সমূহের নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে প্রতিবেদন উপস্থাপন করে নতুন নির্দেশনা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেখানে বলা হয়েছে এখন থেকে আর পার্বত্য জেলা পরিষদ নয়, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এই তিন পার্বত্য জেলায় সরকারি অফিসগুলোয় যে কোনও পদে জনবল নিয়োগের কাজ করবে মন্ত্রণালয়। নিয়োগে অনিয়ম দূর করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এই তিন জেলার বিভিন্ন পদে নিয়োগে অনিয়ম দূর করতেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নিবিড় তত্ত্বাবধানের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন যুগ্ম সচিব এই তথ্য জানিয়েছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় পক্ষের পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে জনবল নিয়োগের বিষয়ে অনিয়মের বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে প্রধানমন্ত্রী এমন নির্দেশ দিয়ে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সিনিয়র সচিব বা সচিবদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা প্রস্তাবে বলা হয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পার্বত্য জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশসহ নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান থাকায় স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
প্রস্তাবে বলা হয়, পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনে তিন পার্বত্য জেলায় নিয়োগের ক্ষেত্রে এ ধরনের পরিস্থিতি প্রায়শ হয়ে থাকে। নিয়োগে এ ধরনের অনিয়ম হওয়ায় যোগ্য চাকরিপ্রত্যাশীরা বঞ্চিত হচ্ছে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশ দেওয়ারও প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেছেন বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে বাস্তবায়নের প্রতিবেদন পাঠানোরও জন্য অনুরোধ জানানো হয় সচিবদের।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন লীগ সরকারের সঙ্গে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জন সংহতি সমিতির মধ্যে সম্পাদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি অনুযায়ী তিন পার্বত্য জেলায় জনবল নিয়োগ জেলা পরিষদগুলোই দেওয়া হয়েছিল।
Leave a Reply