রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৯ অপরাহ্ন
অর্থনৈতিক রিপোর্ট: নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সারা দেশে ৯ সদস্যবিশিষ্ট বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে সরকার। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক করে গঠন করা এ টাস্কফোর্স নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর বাজার পরিস্থিতি ও সরবরাহ চেইন তদারক ও পর্যালোচনা করবে। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে ২০২২ সালের মার্চে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের উচ্চপদস্থ ১৭ কর্মকর্তাকে নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। টাস্কফোর্সে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, আর কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ওই সময় অস্বাভাবিক দাম নেয়া বন্ধে প্রয়োজন অনুযায়ী ‘অ্যাকশনে’ যাওয়া ও তদারকি বাড়ানো এবং অবৈধ মজুত বন্ধে হস্তক্ষেপ করার কথাও বলা হয়েছিল। গঠিত কমিটির প্রথম সভায় পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী মজুতদারদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো, পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে মাত্রাতিরিক্ত দাম নেয়ার ওপর কঠোর নজরদারিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে ১৬ দফা সুপারিশ করে ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা’ বিষয়ক টাস্কফোর্স। কিন্তু ফলাফল শূন্য। দ্রব্যমূল্য পাগলা ঘোড়ার মতো হু হু করে বেড়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত টাস্কফোর্সের সদস্য হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বা উপযুক্ত প্রতিনিধি, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বা উপযুক্ত প্রতিনিধি, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বা উপযুক্ত প্রতিনিধি, কৃষি বিপণন কর্মকর্তা বা সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা, ক্যাবের প্রতিনিধি ও দুইজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। এ ছাড়া জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালককে টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব করা হয়। টাস্কফোর্স প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।
প্রজ্ঞাপনে টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি বিষয়ে বলা হয়, টাস্কফোর্স নিয়মিত বিভিন্ন বাজার, বৃহৎ আড়ত, গোডাউন, কোল্ড স্টোরেজ ও সাপ্লাই চেইনের অন্যান্য স্থানসমূহ সরজমিন পরিদর্শন করবে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার বিষয়টি তদারক করবে; টাস্কফোর্স উৎপাদন, পাইকারি ও ভোক্তা পর্যায়ের মধ্যে যাতে দামের পার্থক্য ন্যূনতম থাকে তা নিশ্চিত করবে ও সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবে।
টাস্কফোর্সকে প্রতিদিনের মনিটরিং শেষে একটি প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও পূর্বাভাস সেল এবং জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষে পাঠাতে বলা হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বিভিন্ন জেলা থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন সংকলন ও পর্যালোচনা করে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদনও পাঠাতে বলা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/প্রতিষ্ঠানকে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা এবং আন্তর্জাতিক বাজার দর ও আমদানি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, কোনো পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি বা সরবরাহ চেইনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্ভব হলে ‘দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও পূর্বাভাস সেল’ হতে তথ্য সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ, পণ্য উৎপাদন, পরিশোধন ও আমদানি হতে স্থানীয় পর্যায়ে বিক্রয় পর্যন্ত সার্বিক কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান, নিত্যপণ্যের সরবরাহ চেইন স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনে এবার থাকবেন শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি। আশা করা যায় বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমে আসবে।
Leave a Reply